শুক্রবার (৮ মে) দুপুরে করোনা ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি বলেন, প্যারাসিট্যামল ব্যতীত জ্বর সেরে গেলে। শ্বাসকষ্ট বা তার কোনো উপসর্গ যেমন শুষ্ক কাশি, কফ, নিশ্বাসের দুর্বলতা এগুলো লক্ষণের উন্নতি হলে। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পর পর দুটি আরটিপিসিআর পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হলে।
তবে শুধু ন্যাজোফেরিয়াল সোয়াবের ক্ষেত্রে যদি দুটি আরটিপিসিআর পরীক্ষা করা সম্ভব না হয় উপরের লক্ষণগুলো যদি টানা ৭২ ঘণ্টা না থাকে তবে রোগীকে হাসপাতালের ছাড়পত্র দেয়া যাবে। ছাড়পত্র পেয়ে রোগীকে বাসায় গিয়ে অবশ্যয় নিজেকে ১৪ দিন আইসোলেশনে রাখতে হবে।
এ সময় ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫ হাজার ৭০৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আগের কিছু মিলিয়ে মোট পরীক্ষা করা হয় ৫ হাজার ৯৪১টি নমুনা। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ১ লাখ ১১ হাজার ৪৫৪টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ৭০৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১৩ হাজার ১৩৪ জন। এ ছাড়া আরও ৭ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২০৬ জনে। যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পাঁচ জন পুরুষ এবং দুজন নারী।
তিনি জানান, আক্রান্তদের মধ্যে আরও ১৯১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ২১০১ জন করোনা রোগী।
ডিসেম্বরে প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে বেশিরভাগ দেশই ভাইরাসটিতে তেমন পাত্তা দেয়নি। অনেক দেশই ধারণা করেছিল, এটি চীনা ভাইরাস এবং এর সংক্রমণ হয়তো ইউরোপ-আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়বে না। এজন্য সেখানকার দেশগুলো তেমন কোনো পদক্ষেপও নেয়নি। ফলও দিতে হচ্ছে তাদের। কারণ সংক্রমণ সংখ্যার দিক থেকে প্রথম দেশগুলোর তালিকার মাঝেই নেই চীন।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার। ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে। পঞ্চম দফায় সেই ছুটি বাড়ানো হয় ৫ মে পর্যন্ত। তার আগেই আরেক দফা ছুটি বাড়িয়ে ১৬ মে পর্যন্ত করা হয়।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার তথ্যানুযায়ী শুক্রবার (৮ মে) সকাল পৌনে ৯টা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ লাখ ৭০ হাজার ৭১১ জন। এছাড়া এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৩৯ লাখ ১৬ হাজার ৩৩৮ জনের শরীরে।
শুক্রবার (৮ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত এ সংখ্যা নিশ্চিত করেছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার। এরইমধ্যে ২১২টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে করোনা ভাইরাস।
আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৫৪ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ২৩ লাখ ২ হাজার ৫৭৩ জন। এদের মধ্যে ২২ লাখ ৫৩ হাজার ৬১৫ জনের শরীরে মৃদু সংক্রমণ থাকলেও ৪৮ হাজার ৯৫৮ জনের অবস্থা গুরুতর।
Post a Comment