করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে আগামী কয়েক সপ্তাহে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২৯ হাজার প্রবাসী দেশে ফিরে আসছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
চলমান সঙ্কট নিয়ে
বুধবার পঞ্চম আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে এক ভিডিওবার্তায় তিনি এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, ”আমাদের
ধারণা মতে, আগামী কয়েক সপ্তাহে প্রায় ২৮ হাজার ৮৪৯ জন প্রবাসী দেশে আসতে পারেন। আমরা
তাদের জন্য কী ব্যবস্থা করছি, তা নিয়ে আলাপ করেছি।”
মালদ্বীপ থেকে বৃহস্পতিবার
আরও চারশ বাংলাদেশি ফিরছেন জানিয়ে মোমেন বলেন, “ইতোমধ্যে আমরা আরও কিছু নিয়ে এসেছি।
প্রবাসীদের যাতে অসুবিধা না হয়, সেজন্য আমরা এক টনের মতো খাবার-দাবার দিয়েছি। দেশটির
প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ওখান থেকে আমাদের ১৫ শ লোক আসবে।”
সৌদি আরব থেকে মোট
কত শ্রমিককে ফেরাতে হবে, সেই হিসাব দেশটি ‘পুরোপুরি’ দেয়নি মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বলেন, “তাদের কনটেক্সটে ৪ হাজার ২৬২ জন আসার সম্ভাবনা আছে।”
তিনি জানান, ওমান
থেকেও এক হাজার বাংলাদেশিকে ফিরতে হবে। ইরাকেও অনেক শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন।
এর বাইরে সংযুক্ত
আরব আমিরাত, জর্ডান, লেবানন প্রভৃতি দেশ থেকে প্রবাসী অনেক বাংলাদেশিকে ফিরতে হচ্ছে
বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্য
থেকে ৩ হাজার ৬৯৫ জন প্রবাসীর দেশে ফেরার তথ্য দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এদের মধ্যে একটি
বিরাট সংখ্যক হচ্ছেন… যারা জেলে ছিলেন, করোনাভাইরাস আসার পরপর মধ্যপ্রাচ্যের সরকারসমূহ
তাদের মোটামুটি মাফ করে দিয়েছেন, তাদেরকে আগে আগে পাঠাচ্ছে।
”আমরা তাদেরকে গ্রহণ
করেছি। এছাড়া যারা ওমরাহ হজ করতে গিয়েছেন, আমরা তাদেরও গ্রহণ করেছি। আর এর সঙ্গে আছেন
যারা আনডকুমেন্টেড বা ইলিগ্যাল, তাদেরও আমরা গ্রহণ করেছি।”
লন্ডন ও যুক্তরাষ্ট্র
থেকে কীভাবে আটকা পড়া বাংলাদেশিদের ফেরানো যায়, সেই পরিকল্পনাও করা হচ্ছে বলে জানান
মন্ত্রী।
করোনাভাইরাসে কেউ
মারা গেলে তার লাশ সৌদি আরব ও আরব আমিরাত দেবে না জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ”তারা
তাদের দেশে ইসলামী নিয়মে দাফন করবে। অন্যান্য দেশ থেকে লাশ দেশে এলেও পরিবার-পরিজনরা
দেখতে পারবেন না।”
সব কিছুর পরও ‘একান্ত
বাধ্য না হলে’ প্রবাসীদের দেশে না ফেরার আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “করোনাভাইরাস
পরীক্ষার সার্টিফিকেট আনুন। নেগেটিভ হলে আপনাদের বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে যেতে পারবেন।
সার্টিফিকেট না থাকলে অবশ্যই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে।”
কুয়েত প্রবাসীদের প্রসঙ্গ
ভিডিওবার্তায় মন্ত্রী
বলেন, কুয়েতে ক্যাম্পে আটক বাংলাদেশিদের ফেরানোর বিষয়টি নির্ভর করছে সেদেশের সরকারের
ওপর।“ওই দেশে যারা আনডকুমেন্টেড
ছিলেন, অবৈধ ছিলেন, তাদেরকে কুয়েত সরকার অ্যামনেস্টি দিয়েছে। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বাংলাদেশিকে
বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্পে রেখেছে।
”তারা বলেছে, ফ্লাইট
তারা অ্যারেঞ্জ করবে।… তারা যদি না করে, আমাদের নিজেদেরকেই একটা আয়োজন করতে হবে। আমরা
তাদের নিয়ে আসব।”
ক্যাম্পে থাকা প্রবাসীদের
১৯০ জনের তালিকা পাঠানো হয়েছে এবং তার মধ্যে ১৪৪ জনের ফেরার বিষয় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে
বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “অভিযোগ
এসেছে, ক্যাম্পে ঠিকমত খাবার দেওয়া হচ্ছে না। আমরা মিশনের সঙ্গে আলাপ করেছি, তাদের
খাবারের যাতে অসুবিধা না হয়।”
Post a Comment